রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৩ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার আশুলিয়ায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যাকান্ডের আজ সাত দিন। দশ বছর ধরে যে প্রতিষ্ঠানে পাঠদান করেছেন সেই প্রিয় অঙ্গণেই বখাটে এক শিক্ষার্থী কেড়ে নিয়েছে তার প্রাণ। উৎপল হত্যাকান্ডের ঘটনার পাঁচ দিন টানা শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর আজ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে পাঠদান। তবে উৎপলকে ছাড়া পাঠদানে মনোযোগী হতে পারছেন না তার সহকর্মী শিক্ষকরা। বারবার উৎপলের স্মৃতি তাদের নাড়া দিচ্ছে। কথা বলতে গিয়ে কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে তাদের।
শনিবার (২জুলাই) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে গতকালের ঘোষণা অনুযায়ী হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঠদান শুরু করেন কর্তৃপক্ষ। এরপর সকাল ১১টা থেকে শুরু হবে হাইস্কুল ও কলেজ শাখার পাঠদান।
নিহত উৎপল কুমারের খুব কাছের সহকর্মী হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শরিফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, উনার অনুপস্থিতিটা কোন ভাবেই আমি মেনে নিতে পারছি না। খুব কষ্ট হচ্ছে উনার জন্য। আমি যখন এখানে জয়েন করি প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে তখন উনি দুই বছরের সিনিয়র আমার। কিন্তু আমরা দুইজন ২০০২ সালে এসএসসি পাশ করেছি। এখানে আসার পরে আমরা একসাথে রুম শেয়ার করেছি। কিন্তু উৎপল স্যারের অনুপস্থিতিতেই আমাদের ক্লাস শুরু করতে হচ্ছে। কারণ বাচ্চাদের কথাটাও চিন্তা করতে হবে। ওদের ভবিষ্যত কোন ভাবেই নষ্ট হতে দেয়া যাবে না। পাশপাশি উৎপল স্যারের খুনীদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জন্য আমাদের সোচ্চার থাকতে হবে।
হাজী ইউনুছ আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেন,গতকালের ঘোষণার পর আজ থেকে পাঠদান শুরু করেছি আমরা। মর্নিং শিফটে ২০-৩০ শতাংশ উপস্থিতি আছে। তবে ১১টা থেকে হাইস্কুল ও কলেজের পাঠদান শুরু হবে। আগামীকাল থেকে আমাদের প্রতিষ্ঠানেও ইদের ছুটি দেয়া হবে। ১৬ জুলাই পর্যন্ত এই ছুটি কার্যকর হবে। আসলে অনেকের মাঝে থেকে এখনও আতঙ্ক কাটেনি। তার উপর ঈদ চলে আসায় অনেক শিক্ষার্থী ঢাকার বাইরে গ্রামের বাড়ি চলে গেছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার কলেজ প্রাঙ্গণে মেয়েদের ক্রিকেট খেলার সময় দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম জিতু রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। পরদিন সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। একই দিন নিহতের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বুধবার অভিযুক্ত ছাত্র জিতু ও বাবা উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বর্তমানে আসামিরা আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে ৫ দিন করে রিমান্ডে আছেন।